ভয়ংকর যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান

Spread the love

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে চলে আসা বৈরী সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হয়েছে। স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক পেরিয়েও দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দূরত্ব কমেনি। দোষারোপ, ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর রাজনৈতিক অবিশ্বাসের জালে আটকে আছে তাদের সম্পর্ক। বিগত ২৫ বছরে প্রকাশ্য যুদ্ধ না হলেও, লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি)-এ উত্তেজনা কখনোই থামেনি। এবারের পরিস্থিতি আরও জটিল ও উদ্বেগজনক, যা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে।

কাশ্মীরে হামলার পর বাড়ছে উত্তেজনা

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার পর ভারত যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই হামলার জেরে পাকিস্তান ঘোষণা করেছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাবে। ইসলামাবাদ করাচি উপকূলের কাছে তাদের ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন’-এ ২৪-২৬ এপ্রিলের মধ্যে এই পরীক্ষা চালানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। পাকিস্তানি নৌবাহিনী জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে মিসাইল পরীক্ষা সম্পন্ন হবে।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

ভারতের পাল্টা প্রস্তুতি

পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণার জবাবে ভারতও সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভারতীয় নৌবাহিনী সফলভাবে মিসাইল ধ্বংসের পরীক্ষা চালিয়েছে। নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি আইএনএস সুরাত থেকে একটি নিম্ন-উড্ডয়ন মিসাইল ধ্বংস করা হয়। ভারতীয় নৌবাহিনী এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, এই সাফল্য তাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

কূটনৈতিক সম্পর্কে হিমশীতলতা

সাম্প্রতিক উত্তেজনায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়েছে, বন্ধ হয়েছে আকাশসীমা। এখন সমুদ্র ও আকাশপথে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের পালা শুরু হয়েছে।

ভারত সিন্ধু নদের পানি চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। জবাবে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি দিয়ে এর মোকাবিলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

রাষ্ট্রপতির কাছে ‘লাল ফাইল’: যুদ্ধের আশঙ্কা?

হামলার পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা রাষ্ট্রপতির কাছে দুটি ‘লাল ফাইল’ জমা দেন। এই ফাইল নিয়ে দেশজুড়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এই ফাইল কি যুদ্ধের অনুমতি বা জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত? রাষ্ট্রপতি কি সত্যিই যুদ্ধের অনুমতি দিয়েছেন?

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা ভারত-পাকিস্তানের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত যুদ্ধে রূপ নিলে তা বিশ্বব্যাপী মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এখন সামরিক ও কূটনৈতিক দুই ফ্রন্টেই তীব্র হয়ে উঠেছে। কাশ্মীরে হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা, পানি চুক্তি বাতিলের মতো ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। এই মুহূর্তে দুই দেশের নেতৃত্বের সংযম ও কূটনৈতিক উদ্যোগই পারে এই সংকটকে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে। তবে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে শান্তি বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।

সূত্র: এবিপি আনন্দ, এএনআই, ভারতীয় নৌবাহিনীর এক্স পোস্ট।

Check Also

ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধের চিঠিতে কী লিখেছেন টিউলিপ

Spread the loveবাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়েছেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *