টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মানেই ছিল সাকিব আল হাসান। কিন্তু সময় বদলেছে, দৃশ্যপটেও এসেছে নতুন মুখ। এখন সেই জায়গায় দৃঢ়ভাবে পা রাখছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সিলেট থেকে চট্টগ্রাম—টানা দুই টেস্টে অলরাউন্ড নৈপুণ্যের ঝলক দেখিয়ে মিরাজ বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধুই উদীয়মান নন, এখন তিনি একজন বিশ্বমানের পারফর্মার।
চট্টগ্রাম টেস্টে মিডল অর্ডার যখন ধসের মুখে, তখন দৃঢ়তা ও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট হাতে এগিয়ে আসেন মিরাজ। চাপের মুখে তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি—ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। আর চমকপ্রদভাবে, তার প্রথম শতকটিও এসেছিল এই মাঠেই। চট্টগ্রাম যেন তার সৌভাগ্যের মঞ্চ!
প্রথমে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে গড়েন ৬৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি, এরপর তানজিম সাকিবের সঙ্গে যোগ করেন আরও ৯৫ রান। তার ব্যাটিং শুধু রান যোগ করেনি, দিয়েছে দলের ইনিংসকে শক্ত ভিত।
এই ইনিংসের দিনেই মিরাজ ছুঁয়ে ফেলেন এক বিরল মাইলফলক—২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের যুগল অর্জন। বাংলাদেশের হয়ে এর আগে এই কৃতিত্ব ছিল শুধু সাকিব আল হাসানের। তবে মিরাজ সেটি করে দেখালেন এক টেস্ট আগে—৫৩তম ম্যাচেই।
সবচেয়ে কম ম্যাচে ২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের অর্জন:
ইয়ান বোথাম (ইংল্যান্ড) – ৪২ টেস্ট
ইমরান খান (পাকিস্তান) – ৫০
কপিল দেব (ভারত) – ৫০
রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত) – ৫১
রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত) – ৫৩
মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ) – ৫৩
এই তালিকায় নাম লেখানো মানেই আপনি বিশ্ব ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডারদের একজন।
সিলেটে বল হাতে ২০০তম উইকেট, চট্টগ্রামে ব্যাট হাতে ২০০০তম রান—এই দুই ম্যাচেই মিরাজ প্রমাণ করেছেন, তিনি এখন আর উদীয়মান তারকা নন, বরং একজন প্রতিষ্ঠিত বিশ্বমানের অলরাউন্ডার।
সাকিবের পথ ধরে শুরু করলেও, নিজের ছায়া এখন আলাদা করে ফেলেছেন মিরাজ। হতে পারে, এটাই সেই মুহূর্ত—যখন এক প্রজন্মের অলরাউন্ডার থেকে আরেক প্রজন্মের হাতে নেতৃত্ব হস্তান্তর শুরু হলো।