ইসলামের বিধান অনুসারে সন্তান জন্মের পর আকিকা করা মুস্তাহাব। পশু জবাই দিয়ে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করা হয়। জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই করাকে মূলত আকিকা বলে। হাদিস শরিফে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত কর (অর্থাৎ পশু যবাই কর) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও। (বুখারি, হাদিস : ৫৪৭২)
আকিকার নিয়ম
আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের জন্য সমমানের দুটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯৬১)
হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার দৌহিত্র হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর আকিকা করেছেন সপ্তম দিনে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২৮৩৪)
এ ছাড়াও জামে তিরমিজির ১৫২২ নম্বর হাদিসে সপ্তম দিনে আকিকা করার কথা বলা হয়েছে। তাই সম্ভব হলে সপ্তম দিনেই আকিকা করা উত্তম। তবে কোনো কারণবসত সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪তম দিন বা ২১তম দিনে করা ভালো।
এ প্রসঙ্গে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, আকিকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে ১৪তম দিনে। তাও সম্ভব না হলে ২১তম দিনে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৭৬৬৯)
আর যদি ২১ দিনের মধ্যেও আকিকা করা না হয় তবে পরে সুবিধামতো সময়ে আদায় করা যাবে।
স্বাভাবিকভাবে সন্তানের আকিকা করার দায়িত্ব তার জন্মদাতা বাবার। অবশ্য অন্য কেউ বা নিজেও নিজের আকিকা করতে পারবেন।
আকিকার গোশত বিতরণ : সন্তানের আকিকার গোশত ইচ্ছে হলে রান্না করে আত্মীয়-স্বজন ও গরিব-মিসকিনকে খাওয়ানো যাবে। তবে আকিকার পশুর গোশত তিন ভাগ করে এক-তৃতীয়াংশ নিজের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনদের জন্য সাদকা করে দিয়ে বাকি এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া সুন্নত। এ ছাড়া আকিকার গোশত সচ্ছল আত্মীয় স্বজনকেও দেওয়া যায়।
আকিকার পশুর চামড়া : আকিকার পশুর চামড়া বাজারে বিক্রি করে, বিক্রিয়কৃত টাকা গরিব-মিসকিনের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।
আকিকার দোয়া
الله حجيي أكيكاتو ابن فولانين دموهابيداميهي ولحموها بلاحميها وعظمها بيازمها وزيلدوها بزلاديهي وشا روحها بشري الله الله ، الله فيدا علي ابن مينار
বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাযিহি আকিকাতু ইবনি ফুলানিন দামুহাবিদামিহী ওয়া লাহমুহা বিলাহমিহি ওয়া আজমুহা বিআযমিহি ওয়া জিলদুহা বিজিলাদিহি ওয়া শা রুহা বিশাররিহি আল্লাহুম্মাজআলহা ফিদাআল্লি ইবনি মিনান্নার।