কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এর জেরে দিল্লি গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু নদী জলচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে, যা ইসলামাবাদের তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনাপ্রবাহে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, পরমাণু শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যে সংঘাত হলে জয়ের সম্ভাবনা কার বেশি?
সামরিক শক্তির তুলনা
সামরিক সরঞ্জামের দিক থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। ভারতের কাছে ৫১৩টি যুদ্ধবিমান, ২,২২৯টি মোট এয়ারক্রাফট, ৮৯৯টি হেলিকপ্টার এবং ৮০টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে। এছাড়া, ভারতের নৌবাহিনীতে ১৪টি ফ্রিগেট এবং ১৮টি সাবমেরিন রয়েছে। স্থলবাহিনীতে ভারতের ৪,২০১টি ট্যাংক এবং ১০০টি সেলফ-প্রপেলড আর্টিলারি রয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের কাছে ৩২৮টি যুদ্ধবিমান, ১,৩৯৯টি মোট এয়ারক্রাফট, ৩৭৩টি হেলিকপ্টার এবং ৫৭টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে। পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে ৯টি ফ্রিগেট এবং ৮টি সাবমেরিন রয়েছে। স্থলবাহিনীতে পাকিস্তানের ২,৬২৭টি ট্যাংক এবং ৬৬২টি সেলফ-প্রপেলড আর্টিলারি রয়েছে, যা এই ক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় বেশি।
পারমাণবিক শক্তির হিসাব
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের কাছে ১৮০টি এবং পাকিস্তানের কাছে ১৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। উভয় দেশই তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তুলনায়, রাশিয়ার কাছে ৪,২৯৯টি, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৩,৭০০টি এবং চীনের কাছে ৬০০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
পেহেলগাম হামলার ঘটনায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ভারতের দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়া এবং পাকিস্তানের কাছাকাছি থাকা চীনের পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রও এই সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে। সামরিক সরঞ্জামে ভারতের সংখ্যাগত শ্রেষ্ঠত্ব থাকলেও পাকিস্তানের কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা এবং উভয় দেশের পারমাণবিক শক্তি যুদ্ধের ফলাফলকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সমাধানই হতে পারে উভয় দেশের জন্য শান্তির পথ।