কঠিন বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া

Spread the love

যেকোনো বিপদ-আপদ কিংবা সংকটময় পরিস্থিতিতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করাই মুমিনের করণীয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, জীবনের প্রতিটি কঠিন মুহূর্তে আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাঁর শরণাপন্ন হতে। তিনি নিজেও যখন কোনো চরম সমস্যা বা বিপদে পড়তেন, তখন একাগ্রচিত্তে আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেন।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও করণীয়ের কথা বলা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা সুরা আল-বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে বলেন—
“হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।”

আর সুরা আল-ইনশিরাহর ৫ ও ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন—
“নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি, অবশ্যই কষ্টের সঙ্গেই রয়েছে স্বস্তি।”

এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় কিছু নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করতেন এবং তা কখনোই বাদ দিতেন না। এসব দোয়া ছিল বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার জন্য অত্যন্ত উপকারী ও গুরুত্বপূর্ণ।

এই আয়াত ও হাদিসগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—জীবনের যেকোনো সংকটে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর ওপর ভরসা রাখাই মুমিনের প্রধান শক্তি।

বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া
اللهم إني أسألك العافية في ديني ودنياي وأهلي ومالي، اللهم استر عوراتي وآمن روعاتي واحفظني من بين يدي ومن خلفي وعن يميني وعن شمالي ومن فوقي، وأعوذ بعظمتك أن أغتال من تحتي

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফি দ্বীনি ওয়া দুনইয়া-য়া, ওয়া আহলি ওয়ামালি; আল্লাহুম্মাসতুর আওরাতি, ওয়ামিন রাওআতি; আল্লাহুম্মাহফাজনি মিন বাইনি ইয়াদাইয়া ওয়া মিন খালফি, ওয়ান ইয়ামিনি ওয়ান শিমালি ওয়া মিন ফাওকি; ওয়া আউজুবিকা বিআজমাতিকা আন আগতালা মিন তাহতি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আমার দ্বীন-দুনিয়া, পরিবার ও ধনসম্পদের নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! আমার দোষত্রুটি গোপন রাখুন, আমার সৌন্দর্যগুলো নিরাপদ রাখুন। হে আল্লাহ আমাকে আমার সামনে-পেছনে, আমার ডানে-বামে ও ওপরের দিক থেকে রক্ষা করুন। আমি আপনার কাছে আপনার মহত্ত্বের অসিলায়— আমার নিচ দিকে গুম হয়ে যাওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (নাসায়ি, হাদিস : ৫৫৩০; আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৪; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৩৮৭১)

হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, নবী করিম (সা.) যখন কোনো গোষ্ঠীর হাতে ক্ষতির আশঙ্কা করতেন, তখন বলতেন, اللهمَّ إنِّي أعُوذُ بِكَ مِنْ جَهْدِ الْبَلَاءِ، وَدَرَكِ الشَّقَاءِ، وَسُوءِ الْقَضَاءِ، وَشَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম, ওয়া নাউজুবিকা মিন শুরুরিহিম।

অর্থ, ‘হে আল্লাহ! আমরা তোমাকেই তাদের মুখোমুখি করছি এবং তাদের অনিষ্টতা থেকে তোমারই কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।’ (আবু দাউদ ও নাসাই)

হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)–কে বলতে শুনেছি, মানুষের ওপর কোনো বিপদ এলে যেন ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফ-লি খাইরাম মিনহা দোয়া পাঠ করে, তখন আল্লাহ-তায়ালা তাকে তার বিপদ দূর করে দেন এবং সে যা কিছু হারিয়েছে, তার বদলে তার চেয়ে উত্তম কিছু দান করেন।’

বিপদের সময় মহানবী (সা.) দোয়াগুলো উম্মতদেরও পড়তে বলেছেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।

অর্থ, ‘একমাত্র তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই। তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই আমি সীমা লঙ্ঘনকারী।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩,৫০০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো এলাকায় মহামারি (সংক্রামক ব্যাধি) ছড়িয়ে পড়লে তোমরা যদি সেখানে থাকো, তাহলে সেখান থেকে বের হবে না। আর বাইরে থাকলে তোমরা আক্রান্ত এলাকায় যাবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)

আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করার আগে প্রথমে দরুদ পড়বেন। দরুদ পড়ে দোয়া শেষও করবেন।

Check Also

দোয়া মাসুরা বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

Spread the loveআল্লাহর নিকট থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য তার কাছে ক্ষমা চাওয়া, ধরনা দেওয়া কিংবা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *