এক সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য তৈরি হওয়া কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ ভবনে এবার বন্দি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার ওই বিশেষ কারাগারকে দুই বছরের জন্য পুনঃচালু করছে এবং সেখানে স্থান পাচ্ছেন সরকার পতনের পর গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১৪৬ জন ভিআইপি বন্দিকে এই কারাগারে স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে এবং আগামী ১৫ মে থেকে বন্দি স্থানান্তর শুরু হবে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিশেষ কারাগারে থাকবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনায়েদ আহমেদ পলক, আরিফ খান জয়সহ একাধিক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।
এছাড়াও কারাগারের তালিকায় রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, এসপি সাদেক খান, সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. সোহাইল, মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক সচিব শাহ কামালসহ নিরাপত্তা ও প্রশাসনের অনেক সাবেক কর্মকর্তা।
কারা অধিদপ্তরের এআইজি (প্রিজন্স) জান্নাতুল ফরহাদ জানান, বিশেষ কারাগার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদস্থ কর্মকর্তা, জেল সুপার, জেলারসহ জনবল নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। কারাগারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং মোবাইল জ্যামার বসানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তিনি বলেন, “এই কারাগারে ভিআইপি বন্দিদের সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি তাদের সেবায় থাকবে কিছু সাধারণ বন্দি।”
তালিকায় আরও রয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, ডা. দীপু মনি, মাহবুব আরা গিনি, আব্দুর রহমান বদি, ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই কারাগারের ইতিহাস ও বর্তমান ব্যবহার বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের এক প্রতীকী চিত্র হয়ে উঠেছে। এক সময় যাকে বন্দি রাখার জন্য তৈরি হয়েছিল এই বিশেষ ভবন, আজ সেখানে জায়গা হচ্ছে তার প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক নেতাদের।