বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের এই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান। বুধবার (২৮ মে ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “জনগণের রায় বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। কিন্তু মনে হচ্ছে, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ও বাইরে কারও ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হতেই হবে। আমরা আবারও বলছি, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
তারেক রহমান বলেন, “যেকোনো দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য একটি জবাবদিহিমূলক ও নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। কিন্তু কথিত ‘অল্প সংস্কার’ আর ‘বেশি সংস্কার’-এর আবর্তে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ ঘুরপাক খাচ্ছে।” তিনি তরুণ প্রজন্ম ও দেশবাসীকে আহ্বান জানান, “জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করুন। কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, কারা প্রতিনিধি হবে, তা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করুন।”
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “জনগণের কাছে যান, তাদের প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করুন। জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস। তাদের মন জয় করুন।” তিনি দলের ৩১-দফা সংস্কার পরিকল্পনা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ দেন, যাতে জনগণের আস্থা অর্জন ও বজায় রাখা যায়।
বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদল—যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। সমাবেশে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগ থেকে হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন, পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে স্লোগানে মুখরিত করেন নয়াপল্টন।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। বিএনপি বারবার দাবি করে আসছে, সংস্কারের নামে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হলে দেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে। তারেক রহমান জোর দিয়ে বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারই তাদের মূল লক্ষ্য।
তারেক রহমানের এই আহ্বান জাতীয় নির্বাচনের প্রতি বিএনপির দৃঢ় অবস্থান এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের সঙ্গে সংযোগ জোরদার করতে এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন, যাতে একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।