বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। এই অনুরোধ জানিয়ে তিনি ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যা প্রকাশ পেয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে।
চিঠিতে টিউলিপ বলেন,
“আমি আশাবাদী, আপনার সঙ্গে সাক্ষাতে আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অভিযোগ সংক্রান্ত ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন,
“আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মেছি এবং গত এক দশক ধরে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট এলাকার মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশের প্রতি আবেগ থাকলেও আমি কখনো সেখানকার বাসিন্দা নই এবং সেখানে কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থও আমার নেই।”
দুদকের তদন্ত নিয়ে উদ্বেগ
টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন,
“দুদক লন্ডনে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। বরং বারবার ঢাকার একটি অজানা ঠিকানায় আমার নামে চিঠি পাঠাচ্ছে এবং পুরো তদন্তের তথ্য একতরফাভাবে গণমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি তার সংসদীয় দায়িত্ব এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতাকে বিঘ্নিত করছে।
পদত্যাগ ও বিতর্ক
উল্লেখ্য, গত বছর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী পর্যায়ের মানদণ্ড উপদেষ্টা লরি ম্যাগনেস তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলেও টিউলিপ নিজ থেকেই পদত্যাগ করেন। তার ভাষায়,
“এই বিতর্ক লেবার পার্টি ও কিয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন সম্ভাব্য সরকারের জন্য বিব্রতকর হতে পারে।”
সম্পত্তি জব্দ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
গত মাসে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করে, যা প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পৃক্ত দু’জনের নামে ছিল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নানা আলোচনা তৈরি হয়।
ড. ইউনূসের লন্ডন সফর
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার (৯ জুন) লন্ডনে পৌঁছাবেন।
এই সফরে তিনি ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড–২০২৫’ গ্রহণ করবেন।
এ ছাড়া তার চ্যাথাম হাউজ ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে।