লন্ডনে প্রায় চার মাসের চিকিৎসা শেষে আজ সকালে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির প্রদত্ত রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি সোমবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় তার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা
বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে ভোর থেকে বিমানবন্দর এলাকায় জড়ো হচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলীয় ও জাতীয় পতাকা, প্ল্যাকার্ড এবং খালেদা জিয়ার ছবি হাতে নিয়ে তারা সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে অবস্থান নিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে সড়ক অবরোধ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি না হয়।
গাজীপুর সদর থেকে আগত রফিকুল ইসলাম বলেন, “স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ফজরের নামাজ পড়েই রওনা দিয়েছি। প্রায় চার মাস নেত্রীর দেখা নেই, তিনি অসুস্থ ছিলেন। প্রতিদিন তার জন্য দোয়া করেছি। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তিনি সুস্থ হয়ে ফিরছেন। আজ তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি।”
সাভার থেকে আগত মহিলা দলের নেত্রী নাজনীন আক্তার বলেন, “রাস্তার ওপর না দাঁড়ানোর নির্দেশনা মেনে আমরা ফুটপাতে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়েছি। আজ আমাদের আনন্দের দিন। গণতন্ত্রের মা দেশে ফিরছেন। সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি।”
বিএনপি মহাসচিবের আশাবাদ
সকালে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের নির্যাতন সহ্য করে খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়েছিলেন। চার মাস চিকিৎসা শেষে তিনি আজ দেশে ফিরছেন। এটি জাতির জন্য আনন্দের দিন। গণতন্ত্রে উত্তরণের এই সময়ে তার উপস্থিতি গণতন্ত্রের পথকে সহজ করবে এবং দেশকে বৈষম্যহীন পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।”
সফরসঙ্গী ও বিশেষ উল্লেখ
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তার দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শার্মিলা রহমান। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর দেশত্যাগের ১৭ বছর পর এবারই প্রথম দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান তারেক রহমানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কাতারে যাত্রাবিরতির সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
গণতন্ত্রের পথে নতুন আশা
বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে বিএনপি নেতাকর্মীরা গণতন্ত্রের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন। তাদের বিশ্বাস, তার নেতৃত্ব দেশকে গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।