কাশ্মীর সীমান্তে নতুন করে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। পাকিস্তানের দাবি, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টা জবাবে তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ রেখায় (LoC) চলছে তীব্র গোলাগুলি এবং সামরিক সংঘর্ষ।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, “পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে হামলা চালানোর চেষ্টাকালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর তিনটি রাফায়েল, একটি এসইউ-৩০ এমকেআই এবং একটি মিগ-২৯ ফুলক্রাম যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। আমাদের বিমানবাহিনীর জেটগুলো নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে।”
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীর অঞ্চলের আকাশে এই প্রতিশোধমূলক হামলা চালানো হয়।
এছাড়া নিয়ন্ত্রণ রেখার ধুন্দিয়াল সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনাদের একটি ব্রিগেড সদরদপ্তর ধ্বংস করার দাবি করেছে। তারা জানিয়েছে, একই সময়ে একটি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে।
কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা
এই সংঘাতের পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক এক সন্ত্রাসী হামলা, যাতে ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক প্রাণ হারান। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ হামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।
এই হামলার জবাবে ভারতের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের একাধিক শহরে চালানো হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। ইসলামাবাদ এই হামলাকে ‘বিনা প্ররোচনায় কাপুরুষোচিত’ বলে আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক জবাব দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও নিরাপত্তা সতর্কতা
এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এখনো পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের ভূপাতিত যুদ্ধবিমান সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এসব দাবি সত্য হলে এটি ভারতের জন্য কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক ক্ষতির একটি।
ভারতের অভ্যন্তরেও উত্তেজনা বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে। উত্তর ভারতমুখী অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।