শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ

Spread the love

দেশব্যাপী আলোচিত মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় আজ শনিবার (১৭ মে) ঘোষণা করা হবে। মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর জানান, এ মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি, মেডিকেল রিপোর্ট, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য এবং মামলার মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য দ্বারা রাষ্ট্রপক্ষ মামলা প্রমাণ করতে পেরেছে। ফলে একটি নিষ্পাপ শিশুকে যেভাবে অমানবিক পাশবিক নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে, তার জন্য আসামিদের আদালত সর্বোচ্চ সাজা দেবে, যা বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

সাক্ষ্য ও প্রমাণাদির ভিত্তিতে প্রধান আসামি হিটু শেখের রিবুদ্ধে শিশু নির্যতন দমন মামলার রায় আইনের ৯ এবং ২ ধারায় ফাঁসি, অন্য আসামি সজীব শেখ ও রাতুল শেখের বিরুদ্ধে দ-বিধির ৫০৬ এর ২ ধারা; এ ছাড়া হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগমের বিরুদ্ধে দ-বিধির ২০১ ধারায় আদালত সর্বোচ্চ সাজা দেবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বাদীপক্ষের আইনজীবী বলেন, মাগুরায় আট বছরের শিশুর সঙ্গে বর্বর পাশবিক ঘটনায় সারা দেশ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা এ ঘৃণ্য ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি জানায়। পাশাপাশি জেলা আইনজীবী সমিতি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আসামিদের পক্ষে সমিতির কোনো আইনজীবী আইনি সহযোগিতা করবেন না। তবে আসামিদের আবেদনের কারণে লিগ্যাল এইড থেকে আসামিপক্ষে আদালতে আইনি সহায়তা দেন একজন। দোষী প্রমাণিত প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদন্ড এবং অন্য আসামিদের সংশ্লিষ্ট ধারায় এ মামলায় সর্বোচ্চ সাজা দেবে আদালত, এটাই আশা।

মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে গত ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশু আছিয়া। এ ঘটনার পর মাগুরাসহ সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গত ৮ মার্চ পুলিশের অভিযুক্ত এ চারজনকেই আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন শিশুর মা আয়েশা আক্তার। এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পর শিশুকে প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ফরিদপুর মেডিকেল এবং পরে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ মারা যায় শিশুটি।

এ ঘটনার পর পুলিশের রিমান্ড চলাকালে মামলার মূল আসামি হিটু শেখ ১৫ মার্চ মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। যেখানে এ ঘটনায় সে একাই জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়। ১৩ এপ্রিল চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আলাউদ্দিন সরদার শিশুটির মায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত চার আসামি আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখ, বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগম, বোনজামাই সজীব শেখ ও সজীবের বড় ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২৩ এপ্রিল চার্জ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৭ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ২৭ এপ্রিল বাদীসহ তিনজনের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষীর কার্যক্রম শুরু হয়ে ৭ মে অষ্টম কার্যদিবসের মধ্যে সাক্ষ্য পর্ব শেষ হয়। ৮ মে আসামিদের ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। এ ছাড়া ১২ ও ১৩ মে যুক্তিতর্ক শেষে ১৭ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করে আদালত।

Check Also

ভাড়া করা বিদেশি সরকারের রাজনীতি আর চলবে না : ইশরাক

Spread the loveজাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *