পৃথিবীতে সবাই সফল হতে চায়। সুখী জীবন গড়তে মানুষ নিরন্তর চেষ্টা করে। তবে কি সবার জীবনে সফলতা আসে? দেখা যায়, কারও সামান্য পরিশ্রমেই জীবন বদলে যায়, আবার কেউ কঠোর পরিশ্রম করেও অভাবমুক্ত হতে পারে না।
আসলে অর্থ-সম্পদ লাভ আল্লাহ তাআলার বিশেষ রহমত। পৃথিবীতে অনেকের কাছে প্রচুর ধন-সম্পদ থাকলেও তারা সুখ ও মানসিক শান্তি থেকে বঞ্চিত। তাই সম্পদ নিজে চূড়ান্ত লক্ষ্য না হলেও সম্মানজনক ও স্বচ্ছল জীবনযাপনের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম।
দুনিয়ায় সুশৃঙ্খল জীবনযাপন এবং আখিরাতে চূড়ান্ত সফলতা অর্জনের জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে দোয়া করাই একমাত্র অবলম্বন। আল্লাহর কাছে সাহায্য ও অমুখাপেক্ষিতা চাইলে মানুষ লোভী কিংবা অকৃতজ্ঞের তালিকায় পড়ে না।
নবী আইয়ুব (আ.)-এর ঘটনা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:
একদিন আইয়ুব (আ.) নগ্ন অবস্থায় গোসল করছিলেন। হঠাৎ তার ওপর স্বর্ণময় পঙ্গপালের একটি ঝাঁক পতিত হয়। তিনি সেগুলো দুই হাতে তুলে কাপড়ে জমাতে থাকেন। তখন তার রব বলেন,
“হে আইয়ুব! আমি কি তোমাকে এত ধনী করিনি যে এসবের প্রয়োজন নেই?”
তিনি উত্তরে বলেন, “হ্যাঁ, হে রব! তবে আমি আপনার বরকত থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩৯১)
ধন-সম্পদ ও হেদায়েত লাভের দোয়া
দোয়া ১
আরবি:
لا غِنَى بي عن بَرَكَتِكَ
উচ্চারণ:
ইয়া রব্বি, লা গিনান বি আন বারাকাতিক।
অর্থ:
হে আল্লাহ! আপনার বরকত থেকে আমি অমুখাপেক্ষী নই।
দোয়া ২
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ দোয়া করতেন:
আরবি:
اللَّهُمَّ إِنِي أَسْأَلُكَ الهُدَى، وَالتُّقَى، وَالعفَافَ، والغنَى
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুক্বা ওয়াল আ’ফাফা ওয়াল গিনা।
অর্থ:
হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া, চরিত্রের পবিত্রতা ও আত্মনির্ভরশীলতা কামনা করছি।
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৮৯)
আল্লাহর গুণবাচক নাম ‘আল-ওয়াজিদু’ পাঠের ফজিলত
যে ব্যক্তি খাবারের সময় প্রতিটি লোকমার সঙ্গে আল্লাহর গুণবাচক নাম (اَلْوَاجِدُ) আল-ওয়াজিদু পাঠ করবে, তার শরীরে নূর সৃষ্টি হবে।
যে ব্যক্তি নির্জনে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর এই নাম পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ধনী ও সম্পদশালী করে দেবেন।
শেষ কথা আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি- তিনি যেন মুসলিম উম্মাহর সকল অভাবী ও অসচ্ছল মানুষকে তার পবিত্র গুণবাচক নাম আল-ওয়াজিদু-এর বরকত দ্বারা ধনী ও সম্মানিত করেন। আমিন।