বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরে রাজধানীর গুলশানে তার বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে সকাল থেকেই জড়ো হতে শুরু করেছেন শত শত নেতাকর্মী। খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছাবে—এই খবরে আবেগাপ্লুত নেতাকর্মীরা নানা স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন ফিরোজার আশপাশের এলাকা।
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের সমন্বয়ে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তার চৌকস বলয়।
দলীয় পতাকা হাতে অনেকেই উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলছেন, “দেশনেত্রী ফিরছেন—এটাই আমাদের স্বস্তি।” কেউ কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে দেখাচ্ছেন ফিরোজার সামনে উদ্দীপ্ত পরিবেশ।
বেগম জিয়ার দেশে ফেরা ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা বিশ্লেষণ। কেউ একে ‘মাইনাস টু তত্ত্বের’ ভেঙে পড়া বলছেন, আবার কেউ দেখছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে।
আর যারা ফিরোজার সামনে অপেক্ষায়, তাদের চোখেমুখে আজকের দিনটি যেন এক সম্ভাবনার প্রহর। এখন প্রশ্ন একটাই—এই প্রত্যাবর্তন কি দেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনবে?
এর আগে, খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিট এবং বাংলাদেশ সময় (সোমবার) রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে। কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতির পর আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ সময় কারাবন্দি ছিলেন। এ সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন অগ্রাহ্য করে চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করে আওয়ামী সরকার।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম হয়। আইনি লড়াইয়ে তিনি সব মামলা মোকাবিলা করছেন। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতও তার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে করা মামলাগুলোকে হয়রানিমূলক বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।