হ্যালো বাংলাদেশ ২৪ নিউজ ২৫শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০
সাদেক আহামদ শিকদার:
এখন আমাদের দেশে শীত কাল এই মৌসুমেই হলো আমাদের দেশে ইসলামী ওয়াজ বা তাফসীর মাহফিলের সময়।দেশে এখন প্রচুর ওয়াজ মাহফিল হইতেছে প্রায় প্রতি পাড়ায় পাড়ায় হইতেছে অনেকটা পাল্লা দিয়ে ।কে কত বড় ওয়াজি বা বক্তা এনে আলোড়ন তুলতে পারেন কার মাহফিলে কত মানুষ বেশি জড়ো করা যায়। এ সবের একটা নীরব প্রতিযোগিতা হয়।অনেক বড় বক্তা এনেছেন আবার অনেক মানুষ জড়ো করতে পারে আয়োজকগণ তো মহাখুশি।
চেহারার মধ্যেই খুশি প্রকাশ পাচ্ছে। কিছু পাবলিক তো আয়োজকদের ভুয়সী প্রসংসা করলেন। আয়োজক কমিটির সভাপতি সাহেব প্রসংসায় যেন আরো একটু উপরে উঠে গেলেন!
উনি ঘোষণা দিলেন আগামী বছর আরো বড় বক্তা নিতে আসবো।
পাবলিক তো আরো কিছু প্রশংসার বানী ছুড়ে দিলেন, সভাপতি সাহেব টাকা- পয়সা যা লাগে সব দিতে প্রস্তুত। শুধু বক্তা চাই। যাতে অত্র জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রোগ্রাম হয়!
এরকম সভাপতির মত বহু মানুষ ছড়িয়ে- ছিটিয়ে আছেন দেশব্যাপী। তাদের বক্তব্য টাকা কোন ফ্যাক্টর না, বক্তা চাই। কত টাকা লাগবে? সব দেব, তবু অমুককে চাই! তমুককে চাই!
যারাই আজকাল ওয়াজ মাহফিল এর ব্যবস্হা করছেন, অধিকাংশ আয়োজকগণের নিয়তের ভিতর গড়মিল।সবার মধ্যে এখন লৌকিকতা কাজ করছে।
কেউ যদি কোথাও ওয়াজ মাহফিল দেয়, সঙ্গে সঙ্গে পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকদের মধ্যে জযবা ওঠে। আমরাও বিশাল এক মাহফিল দেব। যাতে ওদের থেকে লোক বেশী হয়।
অধিকাংশ আয়োজকগণের এখন শোডাউন উদ্দেশ্য। লোক জড়ো করা। বাহবা কুড়ানো! আমরাও পারি! ওরা আর কি? ওদের থেকে আমাদের মাহফিলে শ্রোতা বেশী হয়েছে।
আল্লাহর সন্তুষ্টি, হেদায়েত পাওয়ার নিয়ত, ইখলাসের নিয়ত, মানুষকে সহী পথে আনার মন- মানসিকতা, এসব চিন্তা- চেতনা খুঁজে পাওয়া হাতে গুনা কয়েক তা মাফফিল ছাড়া দুস্কর।
আমরা বক্তাদের দোষারোপ করি, বলি এখন অনেক বক্তা শুধু অন্য বক্তার বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয় কাফির বলে ।ইসলালের এই কঠিন সময়েও অনেক বক্তা নামাজে হাত বুকে না পেটে বাধা ,আল্লাহুকবর জুড়ে না আচঁতে বলা সম্মিলিত মুনাজাত না একাকী মোনাজাত এসব নিয়েই পরে আছেন।
দেখুন! বক্তাদের এসব চরিত্রেরর পিছনে আয়োজকগণেরই সবচেয়ে বেশী অবদান। কারণ আয়োজক যখন বক্তা সিলেক্ট করেন তখন এসব বিচারবিশ্লেষণ না করেই কার সুর ভালো কে কত লোক জমা করতে পারবেন কে অন্য মতালম্বীদের বিরুদ্ধে দাঁত বাঙ্গা জবাব দিতে পারবেন এসব দেখেই সিলেক্ট করেন।
বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিলকে আমরা আবার ব্যবসা বানায়ে ফেলেছি। এখন ওয়াজ মাহফিল হয়, কালেকশনের নিয়্যতে। ওয়াজ মাহফিলটা কালেকশনের একটা মাধ্যম।
কোন কোন বক্তা আনা হচ্ছে শুধু কালেকশন করার জন্য। ওসব বক্তাদের নামই কালেকশনের বক্তা। ওনারা মঞ্চে উঠে যেন স্রোতাদের জাদু করে ফেলেন! কেউ তো এমন এমন আজগুবি কেচ্ছা- কাহিনী বলে টাকা আদায় করেন, যা বড় দুঃখজনক। অনেক কথা এবং কাজ তারা করেন, যা কুরআন হাদীসের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।
এসব লাইন ছাড়া কথা- বার্তা, আর সুরের মোহনা দিয়ে, এবং বিভিন্ন ফজীলতের বানী শুনায়ে স্রোতাদের বশে এনে টাকা চাওয়া হয়। কালেকশন হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা, জমি,ইট, সিমেন্ট – বালু, এমনকি স্বর্ণালাংকার পর্যন্ত কালেকশন হতে দেখা যায়। এসব কালেকশনের বক্তাদের কর্তৃপক্ষ মোটা অংকের হাদিয়া দেন।
এরকম নানাবিধ ফায়দা হাসিলের জন্য এবং প্রভাব বিস্তারের জন্য আজকাল ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। আয়োজকগণের বিশুদ্ধ নিয়্যাত পাওয়া মুশকিল। অধিকাংশ জায়গাতেই নিয়্যাতে ঘুন লেগেছে। হেদায়েতের নিয়্যাত, ইখলাসের নিয়্যাত এখন আর খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না । যার কারণে এখন প্রায় প্রতি পড়ায় পাড়ায় ওয়াজ মাহফিল হইতেছে কিন্তূ মানুষ দিন দিন মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছে ,মানুষের মধ্যে আজ নৈকতার খুব অভাব , ইনসাফের অভাব ,ওয়াজ মাহফিল থেকে আজ যেন রুহানিয়্যাত উঠে গেছে।
ওয়াজ মাহফিল আছে আগের চেয়ে অনেক বাড়ছে সাথে সাথে বাড়ছে স্রোতা। কিন্তু মাহফিলে কি যেন নেই। স্রোতাদের উপকারে আসছে খুবই কম।
আয়োজকদের নিয়্যাত উল্টা – পাল্টা, সেই সাথে কিছু বক্তার তো আছেই।
এজন্য আয়োজকগণের নিয়্যাত পরিশুদ্ধ হওয়া চাই। লৌকিকতা নয়। মানুষকে দেখানোর জন্য ওয়াজ মাহফিল নয়। কোন শোডাউন নয়। ওয়াজ মাহফিল হোক সহীহ ইসলাম প্রচারের জন্য ইকামতে দ্বীন কায়েমের জন্য হেদায়েতের উদ্দেশ্যে হোক, এটাই কামনা।আল্লাহ আমাদের সহী বুঝ দান করুন আমীন।
Santa Anna
Bercelona, Spain
Tel: +34 631 72 10 58
hellobd24news@gmail.com
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতিঃ শিকদার মুহাম্মদ কিবরিয়াহ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ শাহ নেছার আলী
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ রুহুল আমীন
নির্বাহী সম্পাদকঃ সাদেক আহমদ শিকদার
ব্যবস্হাপনা সম্পাদকঃ রেজাউল করিম (সুমন)