এবার ঈদের কারণে টানা ৯ দিন ছুটির কবলে পড়ছে দেশ। ফলে এই সময়ে বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তাহলে কি এই সময়ে আর্থিক লেনদেন বন্ধ থাকবে? অবশ্যই নয়, এই সময়ে খোলা থাকবে সব বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা বা লেনদেনের ব্যবস্থা।
কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যাবে, চাইলে পয়েন্ট অব সেলে গিয়ে লেনদেন করা যাবে। এ সময়ে সব ধরনের ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেনের ব্যবস্থা চালু থাকবে। পাশাপাশি বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস চালু থাকবে। ফলে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও আর্থিক লেনদেন চালু রাখতে সমস্যা হবে না।
সারা দেশে ব্যাংকগুলোর এখন ১২ হাজার ৯৪৬টি এটিএম বুথ ও ৭ হাজার ১২টি সিআরএম রয়েছে। পিওএস রয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৯টি। ব্যাংকগুলো এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৯৪ লাখ ডেবিট কার্ড ও ৭৫ লাখ প্রিপেইড কার্ড ইস্যু করেছে। অবশ্য একজন গ্রাহকের একাধিক ব্যাংকের কার্ড রয়েছে। ব্যাংকিং সেবায় থাকা বড় জনগোষ্ঠী ডিজিটাল সেবার আওতায় এসেছে। ফলে ঈদের ছুটিতে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও নগদ টাকার চাহিদা মেটাবে কার্ড।
এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলো হিসাব খোলার সময় চেকের পাশাপাশি এটিএম কার্ড নেওয়া বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ফলে নতুন গ্রাহকদের সবার এটিএম কার্ড রয়েছে। ব্যাংক শাখা খোলা থাকলে শাখায় গিয়ে টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়া যায়। একইভাবে এখন ক্যাশ রিসাইকেল মেশিনে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জমা দেওয়া হয়। বেশির ভাগ ব্যাংক এটিএমের পরিবর্তে সিআরএম স্থাপন করছে। পাশাপাশি কার্ড দিয়ে পিওএস–এ গিয়ে কেনাকাটা ও লেনদেন করা যায়।
এর বাইরে এখন ব্যাংকের নিজস্ব অ্যাপসহ ইন্টারনেটভিত্তিক সেবা রয়েছে। এই সেবার মাধ্যমে এক ব্যাংকের গ্রাহক অন্য ব্যাংকের গ্রাহককে তাৎক্ষণিক টাকা পাঠাতে পারে। ফলে ঈদের বন্ধে টাকা পাঠানোর কাজটি বন্ধ থাকবে না। এখন ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহক ১ কোটি ১৫ লাখ। গত জানুয়ারিতে এই সেবায় এক লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের সেলফিন, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস পে, ব্র্যাক ব্যাংকের আস্থা ও সিটি ব্যাংকের সিটিটাচ বেশ জনপ্রিয়।
বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস সেবা এখন ব্যাপক জনপ্রিয়। এই সেবাগুলোর সবই খোলা থাকছে। এসব সেবায় ব্যাংক থেকে টাকা জমা করা যাচ্ছে। পাশাপাশি ঈদের বন্ধে এজেন্টের সেবা চালু থাকবে, তাই টাকা উত্তোলন ও জমা দেওয়া যাবে।
ছুটির সময় ব্যাংক গ্রাহকদের বিকল্প মাধ্যমে লেনদেনের সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ জন্য ব্যাংকগুলোকে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পয়েন্ট অব সেল, ই–পেমেন্ট গেটওয়ে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসসহ সব ডিজিটাল সেবায় নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
