ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনে স্থানান্তরের অভিযোগে টিকটককে ৫৩০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করেছে আয়ারল্যান্ডের তথ্য সুরক্ষা কমিশন (ডিপিসি)।
শুক্রবার (২ মে) ডাবলিন থেকে প্রকাশিত এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিকটক শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে যে, ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের কিছু তথ্য চীনে হোস্ট করা হয়েছিল। এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ডিপিসি ইউরোপের অন্যতম বড় এই জরিমানার ঘোষণা দেয়।
এর আগে ২০২৩ সালেও শিশুদের তথ্য সংরক্ষণে গাফিলতির কারণে টিকটককে ৩৪৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল ইইউ।
ডিপিসির তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ব্যবহারকারীদের যথাযথভাবে জানানো হয়নি যে, তাদের তথ্য চীনে পাঠানো হচ্ছে বা চীনা কর্তৃপক্ষ এতে প্রবেশ করতে পারে। স্বচ্ছতার অভাবে অতিরিক্ত ৪৫ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা আরোপ করা হয়।
ডিপিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টিকটককে আগামী ৬ মাসের মধ্যে ইউরোপীয় তথ্য সুরক্ষা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা সংশোধন করতে হবে, নইলে তথ্য চীনে পাঠানো বন্ধ করতে হবে।
এটি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ওপর চাপ আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস একটি আইন পাস করে, যেখানে বলা হয় টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সকে মার্কিন বাজারে থাকতে চাইলে মালিকানা ছেড়ে দিতে হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই আইন বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৯ জুন নির্ধারণ করেছেন।
এদিকে, ভুল তথ্য ছড়ানো, সহিংস ও অশ্লীল কনটেন্ট এবং অস্বচ্ছ অ্যালগরিদম ব্যবহারের অভিযোগে নেপাল, পাকিস্তান ও ফ্রান্সের নিউ ক্যালেডোনিয়ায় টিকটক সাময়িক নিষিদ্ধ ছিল।
জবাবে টিকটক দাবি করেছে, তারা ইউরোপে ১২ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগে ‘ক্লোভার প্রকল্প’ চালু করেছে এবং ইউরোপীয় তথ্য সাধারণত নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে সংরক্ষণ করে। তবে ২০২১ সালে শুরু হওয়া তদন্তে জানা যায়, কিছু তথ্য চীনে সংরক্ষিত ছিল, যা পরে মুছে ফেলা হয়—এটি তাদের আগের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।