সুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে এক অমূল্য নেয়ামত। আবার অসুস্থতাও একটি নেয়ামত—কারণ, এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করেন, পাপ মোচন করেন এবং ধৈর্য ধরে সবরকারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।
ইসলামে রোগ-শোককে শুধু দুর্ভোগ হিসেবে নয়, বরং আত্মশুদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। হাদিসে এসেছে,
“যে ব্যক্তি সকালে কোনো অসুস্থ মুসলমানকে দেখতে যায়, ৭০ হাজার ফেরেশতা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করে। আর বিকেলে রোগী দেখতে গেলে, পরদিন সকাল পর্যন্ত ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করে।”
— তিরমিজি: ৯৬৭
রোগ-ব্যাধি শুধু দেহের কষ্টই নয়; এটি দেহের ‘যাকাত’ স্বরূপ—যার মাধ্যমে গুনাহ ঝরে পড়ে, আত্মা পরিশুদ্ধ হয়, এবং দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
রোগী দেখতে গিয়ে যেসব দোয়া পড়া যায়
১. হালকা অসুস্থতা বা সান্ত্বনার জন্য:
আরবি:
لَا بَأْسَ طَهُوْرٌ إِنْ شَاءَ اللَّهُ
উচ্চারণ: লা বাসা তুহূরুন ইন শা’আল্লাহ।
অর্থ: ভয় নেই, ইনশাআল্লাহ এ রোগ আপনার জন্য পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধির মাধ্যম হবে এবং আপনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন।
২. রোগ থেকে আরোগ্যের জন্য শক্তিশালী দোয়া:
আরবি:
أَذْهِبِ الْبَأْسَ رَبَّ النَّاسِ، وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي، لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণ: আজহিবিল বা’স, রাব্বান নাস, ওয়াশফি, আنتাশ শাফি, লা শিফা’ ইল্লা শিফাউকা, শিফা’আন লা ইউগাদিরু সাক্বামা।
অর্থ: হে মানুষের রব! রোগ দূর করে দিন। আপনি হচ্ছেন একমাত্র আরোগ্যদানকারী। আপনার আরোগ্য ছাড়া কোনো আরোগ্য নেই। এমন আরোগ্য দিন, যা কোনো রোগ অবশিষ্ট রাখবে না।
এই দোয়াটি রাসুলুল্লাহ (সা.) রোগীকে সুস্থতার জন্য নিজ হাতে তার গায়ে বুলিয়ে দিয়ে পড়তেন।
— বুখারি: ৫৭৫০, মুসলিম: ২১৯১
৩. বিশেষ দোয়া নবী (সা.)-এর পছন্দ অনুযায়ী:
আরবি:
أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ
উচ্চারণ: আসআলুল্লাহাল আজিম, রাব্বাল আরশিল আজিম, আই ইয়াশফিয়াকা।
অর্থ: আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, যিনি মহান আরশের অধিপতি, তিনি যেন আপনাকে আরোগ্য দান করেন।
শেষ কথা
রোগী দেখা শুধু সামাজিক দায়িত্ব নয়; এটি একটি বড় সওয়াবের কাজ। রোগীর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সান্ত্বনা দেওয়া, দোয়া করা, এবং আল্লাহর কাছে তার সুস্থতার জন্য আবেদন করাই মুসলিমের দায়িত্ব।
আল্লাহ আমাদের সকলকে রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দিন এবং অসুস্থদের দ্রুত আরোগ্য দান করুন। আমিন।