ইরানের পরমাণু প্রকল্পকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে চলমান সংলাপের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করেছেন। তবে তার এই ইতিবাচক মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওয়াশিংটন ইরানের সামরিক গবেষণা সংস্থা ‘অর্গানাইজেশন অব ডিফেন্সিভ ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ’ (এসপিএনডি)-এর তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা এই কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং তাদের কার্যক্রম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম ও প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি।
নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, দেশটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কোনো মার্কিন সংস্থার সঙ্গে তাদের আর্থিক বা বাণিজ্যিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সোমবার (১২ মে ২০২৫) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “ইরান ইস্যুতে আমরা কী করতে পারি, তা দেখা যাক। আলোচনার ফলাফল ইতিবাচক হবে বলে আশা করছি। তবে কেউ পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না। তেহরান এখন পর্যন্ত আলোচনায় যৌক্তিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।” তিনি ইরানের অর্থনৈতিক সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনাও করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান পরমাণু ইস্যুতে একাধিক পরোক্ষ বৈঠকে অংশ নিচ্ছে। বৈঠকের পর উভয় পক্ষ ইতিবাচক বক্তব্য দিলেও সমঝোতার পথ এখনও অনেক দূর। ট্রাম্পের প্রশংসামূলক বক্তব্য সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি করলেও নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে।
অন্যদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ইউরোপীয় দেশগুলোকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এক ফরাসি ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি যদি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ‘স্ন্যাপব্যাক’ পদ্ধতি চালু করে, তবে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে তা নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হবে।
মূল তথ্য:
- ঘটনা: ইরানের সামরিক গবেষণা সংস্থা ও তিন কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- কারণ: পরমাণু প্রকল্পে সরাসরি জড়িত থাকা ও পারমাণবিক অস্ত্রের ঝুঁকি বাড়ানো
- মার্কিন অবস্থান: ট্রাম্পের প্রশংসার পাশাপাশি কঠোর নিষেধাজ্ঞা
- ইরানের প্রতিক্রিয়া: ইউরোপীয় দেশগুলোকে ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিয়ে হুঁশিয়ারি
- প্রেক্ষাপট: চলমান পরমাণু সংলাপে অগ্রগতির অভাব