‘ইসমে আজম’ শব্দটি আরবি। এর মধ্যে ‘ইসম’ অর্থ নাম, আর ‘আজম’ অর্থ শ্রেষ্ঠ বা মহান। আল্লাহ তাআলার অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে, কিন্তু এসব নামের মধ্যে এমন কিছু রয়েছে, যেগুলোতে তাঁর সবচেয়ে বড়ত্ব, মাহাত্ম্য ও অনন্যত্ব প্রকাশ পায়—এই বিশেষ নামগুলোকে ইসমে আজম বলা হয়।
ইসমে আজমের ফজিলত:
ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করলে আল্লাহ তা কবুল করেন। হাদিস শরিফে এসেছে, যে ব্যক্তি ইসমে আজম উচ্চারণ করে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ তাআলা সেই প্রার্থনা কবুল করে নেন। তাই এই নামের ওসিলায় দোয়া করা দোয়া কবুলের জন্য নিশ্চিত উপায়।
একটি সহিহ হাদিসের বর্ণনা:
হজরত আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ (রা.) তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন—একবার নবী করিম (সা.) একজন ব্যক্তিকে এই দোয়া করতে শুনলেন:
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদ, আল্লাযি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ, ওয়া লাম ইয়াকুন লাহু কুফুওয়ান আহাদ।
অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এই সাক্ষ্যের মাধ্যমে যে, আপনি একমাত্র আল্লাহ; আপনার কোনো শরিক নেই; আপনি এক, নির্ভরযোগ্য; আপনি কাউকে জন্ম দেননি এবং আপনাকেও কেউ জন্ম দেয়নি, আর আপনার কোনো সমকক্ষও নেই।”
এ দোয়া শুনে রাসুল (সা.) বললেন:
“সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এ ব্যক্তি আল্লাহর সেই মহান নামে দোয়া করেছে—যার মাধ্যমে দোয়া করলে কবুল হয়, এবং যার অসিলায় কিছু চাওয়া হলে তা দান করা হয়।” (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
ইসমে আজমের আমল কেন করবেন?
অনেক হাদিসবিশারদ একমত হয়েছেন যে, এই দোয়াটিই ইসমে আজম। তাই মুমিনদের উচিত এই পবিত্র নাম ও দোয়ার মাধ্যমে দোয়া করা, আন্তরিকতা ও আস্থার সঙ্গে আল্লাহর দরবারে চাওয়া-পাওয়া তুলে ধরা।
করণীয়:
🔹 মনে যা ভালো ও কল্যাণকর, তা আল্লাহর কাছে ইসমে আজমের মাধ্যমে চাইতে থাকুন।
🔹 এই দোয়াটি মনে রেখে দোয়ার সময় অন্তর্ভুক্ত করুন।
🔹 আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসা রেখে তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়ার সৌভাগ্য দান করুন এবং আমাদের প্রার্থনাগুলো কবুল করুন। আমিন।