কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে টানা সাত রাত ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গোলাগুলি হয়েছে বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (১ মে) এই তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযোগ, পাকিস্তান সেনারা যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ করছে। জম্মু-কাশ্মিরের কুপওয়ারা, উরি ও আখনূর সেক্টরে টানা সাত রাত ধরে ছোট অস্ত্র দিয়ে এই গুলিবর্ষণ চালানো হয়েছে। পাল্টা জবাবে ভারতীয় সেনারাও গুলি চালায়, তবে “পরিমিতভাবে”।
তবে পাকিস্তানের তরফে এই ঘটনার বিষয়ে সরকারি প্রতিক্রিয়া বা দেশটির সংবাদমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অতীতের মতো এবারও ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো সরাসরি পাকিস্তানকেই দোষারোপ করছে।
এই গোলাগুলি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন কাশ্মিরের পেহেলগামে কয়েকদিন আগে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা। ওই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার রাতে শুধু এলওসিতেই নয়, আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবরও গুলিবর্ষণ শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে প্রথমবারের মতো কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। এর মধ্যে কাশ্মিরের অধিকৃত অঞ্চলে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় উত্তেজনা তুঙ্গে পৌঁছেছে।
এই ঘটনার জেরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি উভয় দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরস্পরের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে নিজ দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দেয়।
এতে দুই দেশের বহু নাগরিক তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করেছেন, যা দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের অবনতির একটি গুরুতর ইঙ্গিত বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।