ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা বন্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে ডিএনসিসি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) যৌথভাবে অভিযান শুরু করেছে। মঙ্গলবার (১৩ মে, ২০২৫) আসাদগেট এলাকায় পরিচালিত অভিযানে প্রায় ৩০টি অবৈধ রিকশা জব্দ করা হয়।
অভিযানের বিস্তারিত:
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, এই রিকশাগুলোর কারণে শহরে ২০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে, যার প্রধান শিকার নারী ও শিশুরা। অবৈধ রিকশাগুলো কোনো নিরাপত্তা নীতিমালা মেনে তৈরি বা পরিচালিত হয় না, ফলে অনিয়ন্ত্রিত গতি ও অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, “এগুলো প্রায়ই পথচারীদের ওপর উঠে যায় এবং শহরের গণপরিবহণের শৃঙ্খলা নষ্ট করে।”
পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা:
১. অবৈধ রিকশা বন্ধ: ডেসকোর সহায়তায় রিকশার চার্জিং পয়েন্ট ও উৎপাদন ওয়ার্কশপ বন্ধ করা হবে। মূল সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে; এগুলো শুধু অভ্যন্তরীণ সড়কে চলতে পারবে।
২. নিরাপদ রিকশার নকশা: বুয়েটের সহযোগিতায় নিরাপদ ব্যাটারিচালিত রিকশার নকশা তৈরি করা হয়েছে। অনুমোদিত কোম্পানিগুলো এই নকশায় রিকশা উৎপাদন করবে।
৩. চালক প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স: এই মাসের মধ্যে রিকশা চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ চালকরা বৈধ লাইসেন্স পাবেন এবং নির্দিষ্ট এলাকায় অনুমোদিত রিকশা চালাতে পারবেন। একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একটি লাইসেন্স দেওয়া হবে।
৪. এলাকাভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ: এক এলাকার রিকশা অন্য এলাকায় চলতে পারবে না। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে।
৫. বাণিজ্য বন্ধ: রিকশা নিয়ে চলমান অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করা হবে।
অভিযানে উপস্থিতি:
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম বদরুদ্দোজা, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, ডিএমপির কর্মকর্তারা এবং ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর অন্যান্য কর্মকর্তারা।
উদ্দেশ্য:
ডিএনসিসি প্রশাসক জানান, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, গণপরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং শহরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিত রিকশা ব্যবস্থার মাধ্যমে ঢাকার সড়কে শৃঙ্খলা ও যাত্রী সুবিধা বাড়ানো হবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
ডিএনসিসি ও ডিএমপি অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে এবং নিরাপদ রিকশা ব্যবস্থা চালু করতে দ্রুত কাজ করবে।