কখনো স্বেচ্ছাসেবী, কখনো উদ্যোক্তা, মাঝে মধ্য মানবিক কন্যা, কখনো আবার ছাত্রলীগ নেত্রী। হঠাৎ দেশের এ প্রান্তে আবার হঠাৎ করে আরেক প্রান্তে,আজ এ দেশে কাল হঠাৎ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে। গেলো সৈরাচার শাষকের আমলে এশিয়া মহাদেশের কয়েকটি দেশে ভ্রমণে গেছেন এলিট শ্রেণির লোকের ভ্রমণসঙ্গী হয়ে।
সর্বশেষ সিলেটের বন্যায় বন্যার্তদের সহায়তার উদ্যোগ নিয়ে মনিরামপুরসহ বাইরে থেকেও শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, মন্ত্রী, এমপিসহ বড় বড় রাজনৈতিক ব্যক্তি, এমনকি জনসাধারণের কাছ থেকে মফস্বল পর্যায় থেকে সহযোগিতার কথা বলে কয়েক লাখ লাখ টাকা তুলে নাম মাত্র ত্রান নিয়ে ফটোসেশন করে নজরে আসে এই প্রতারক সানজিদা জেরিন।
অভিযোগ আছে, চুয়াডাঙ্গার জনৈক শরিফুল ইসলাম রাজের সঙ্গে যৌথভাবে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের পার্টনারশিপে ব্যবসা করত মানবতার ফেরিওয়ালার মুখোশধারী এই জেরিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বেচ্ছাসেবীর ট্যাগ দিয়ে দেশব্যাপী চেষ্টা করেছিলেন একটি অবস্থান তৈরি করতে।
সর্বশেষ নিজ এলাকা মনিরামপুর পৌর শহরের ২টি স্থান পরিবর্তনের পর পৌরশহরের তাহেরপুরের জৈনক হাজী হাফিজুর রহমানের মিম টাওয়ারের ২য় ফ্লোরে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে উদ্বোধন করে “ধাবা” নামের রেস্টুরেন্টে। একই ফ্লোরে ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)’র এজেন্ট নিয়ে শুরু করে ঋণ প্রদানের নামে ব্যাংক বহিঃভূত অপরাধ।
ইউসিবি’র উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, এজেন্ট শাখায় কোনো ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা না থাকলেও জেরিন ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগিয়ে ও স্বৈরাচারি ক্ষমতাবলে চলমান রেখেছিল তার সুদে কারবার। এমনকি ইউসিবি ব্যাংকের নামে একাধিক পরিচয়পত্র তৈরি করে অথোরাইজ স্বাক্ষর জালের মতো এহেন দূরদর্শী ব্যাংক বহিঃভূত অপকর্ম করেছেন সানজিদা জেরিন।
এখানেই শেষ না, উপজেলার মফস্বল পর্যায়ের যুবক-যুবতীদের টার্গেট করে ধাবা ও ইউসিবির বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লিখিত স্টাম্পের মাধ্যমে সানজিদা জেরিন লুটে নিয়েছে কোটি টাকা। জেরিনের খপ্পরে পড়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কেশবপুরের একটি পরিবার হয়েছে সর্বশান্ত।
অনুসন্ধানের তথ্য এবং কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, মনিরামপুর উপজেলার ঢাকুরিয়ার তানজিল ইসলাম ও সঞ্জয় রায়ের ২ লাখ, গোপালপুরের মৃত আনারুল মহলদার ছেলে আবির হোসেন ২ লাখ, মনিরামপুর পৌর শহরের ভগমান পাড়ার অমিত শাহার মেয়ে নৃত্য শিল্পী তন্দ্রা শাহার ৪ লাখ ৫০ হাজার, দেবীদাসপুরের হুমায়রা খাতুনের ২ লাখ, চাদপুর মাঝিয়ালীর আফ্রিদী হাসানের ২ লাখ, কেশপুরের নাজমুল হুদার ৬ লাখ, উপজেলা সমবায় অফিসের এক কর্মচারীকে ব্যবসায়ী পার্টনার নেবে বলে মোটা অংকের টাকা, উপজেলার খেদাপাড়া কৃষি ব্যাংক শাখা থেকে ১০ লাখ, কর্মসংস্থান ব্যাংক মনিরামপুর শাখা থেকে ২ লাখ, আর আর এফ এনজিও মনিরামপুর হতে ৩ লাখ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষমতা ও নারীর কোমলতাকে পুঁজি করে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন জেরিন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তর ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।