আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য পেতে হলে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, বিনীতভাবে দোয়া ও অনুনয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর সেই সাহায্য পাওয়ার সর্বোত্তম পথ হলো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো দোয়াগুলোর অনুসরণ।
হজরত আবু উমামা (রাঃ) বলেন, আমরা একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল! আপনি অনেক দোয়া করেছেন, কিন্তু আমরা সেগুলো মনে রাখতে পারি না।” তখন তিনি বললেন, “তবে কি আমি তোমাদের এমন একটি দোয়া বলে দেব না, যাতে সব দোয়ার সারাংশ থাকবে?”
তিনি বললেন, তোমরা এ দোয়াটি পড়ো:
দোয়া
اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ مِنْهُ نَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ…
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি মা সাআলাকা মিনহু নাবিয়্যুকা মুহাম্মাদুন ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি মাসতাআজা বিকা মিনহু নাবিয়্যুকা মুহাম্মাদুন ওয়া আংতাল মুসতাআনু ওয়া আলাইকাল বালাগু ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি।
অর্থ:
“হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে সেই সব কল্যাণ চাই, যা তোমার নবী মুহাম্মাদ (সা.) তোমার কাছে চেয়েছেন। আর সেই সব অকল্যাণ থেকে আশ্রয় চাই, যেগুলো থেকে তিনি আশ্রয় চেয়েছেন। তুমিই সাহায্যকারী, সবকিছু তুমিই পৌঁছে দাও। আর তোমার সাহায্য ছাড়া কারও কোনো ক্ষমতা নেই।”
তিরমিজি শরিফ
এটি একটি পরিপূর্ণ ও গভীর অর্থবহ দোয়া। মুমিনের উচিত, আল্লাহর সাহায্য কামনায় এটি নিয়মিত পড়া।
মাসিক বা ঋতুস্রাব একটি স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়া, যা প্রতিটি নারীর মধ্যেই ঘটে থাকে। কিন্তু অনেক মা-বোন রয়েছেন, যাদের মাসিক নিয়মিত হয় না। এতে তারা দুশ্চিন্তায় ভোগেন, কখনো সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রেও বাধা আসে।
এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিচের কিছু কোরআনিভিত্তিক আমল করতে পারেন— ইনশাআল্লাহ উপকার পাওয়া যাবে:
১. কোরআনের আয়াত লিখে পেটে রাখা
সুরা বাকারা, আয়াত ১৮:
صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
উচ্চারণ:
সুম্মুম বুকমুন উমইয়ুন ফাহুম লা ইয়ারজিঊন।
এই আয়াতটি কাগজে লিখে পরিষ্কার কাপড়ে মুড়িয়ে পেটের নিচে বেল্ট দিয়ে কিছু সময়ের জন্য বেঁধে রাখতে পারেন।
২. পানিতে আয়াত পড়ে ফুঁ দেওয়া
সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৮৭:
উচ্চারণ:
লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্জালিমিন।
প্রতিদিন ৩৪১ বার পড়ে জমজম বা বিশুদ্ধ পানিতে ফুঁ দিয়ে ১১ দিন পান করুন।
শুরুর আগে ও শেষে দরুদ শরিফ পাঠ করুন। প্রতিবার দোয়া করুন: “হে আল্লাহ! আমাকে শেফা দান করো।”
সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৪৪
উচ্চারণ:
ওয়ামা মুহাম্মাদুন ইল্লা রাসুল… আফাইম্মা-তা আও কুতিলানকালাবতুম আলাআ কাবিকুম।
প্রতিদিন ৭ বার এই আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে সেই পানি পান করুন। নিয়মিত করলে ইনশাআল্লাহ উপকার পাবেন।
শেষ কথা
মাসিক অনিয়ম হলে একদিকে যেমন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি, অন্যদিকে আত্মিক আমল ও দোয়ার মাধ্যমেও শিফা চাওয়া উচিত।
আমরা যেমন চিকিৎসকের পরামর্শ নিই, তেমনি মহান আল্লাহর কাছেও চাই যেন তিনি আমাদের কষ্ট লাঘব করেন, শরীর ও মন সুস্থ রাখেন।