রিজিক বৃদ্ধির উপায় ও ইসলামের নির্দেশনা

ছবি : সংগৃহীত
Spread the love

মানবজীবনে হালাল রিজিকের গুরুত্ব অপরিসীম। সুস্থ ও সম্মানজনক জীবনযাপনের জন্য যেমন পরিশ্রম জরুরি, তেমনি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও হালাল উপায়ে রিজিক অন্বেষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন-
“অতঃপর যখন সালাত শেষ হবে, তখন তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অন্বেষণ করো; আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফল হও।”
(সূরা জুমু’আহ, আয়াত ১০)

রিজিক বৃদ্ধির জন্য রাসুল (সা.)-এর দিকনির্দেশনা
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত—
রাসুল (সা.) বলেছেন,

“হে আদম সন্তান, তুমি আমার ইবাদতের জন্য সময় দাও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্যে ভরে দেব এবং দারিদ্র্য দূর করব। আর যদি তা না করো, তবে তোমার হাত কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকবে, কিন্তু অভাব তোমার পিছু ছাড়বে না।”
(তিরমিজি)

রিজিক বৃদ্ধির জন্য দোয়া
اللهم اغفر لي ذنبي وَوَسَحُ لِي فِي رِزْقِي وَبَارِك لي فيما رَزَقْتَنِي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির লি যাম্বি, ওয়া ওয়াসসিহ লি ফি রিযকি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাযাকতানি।
অর্থ: হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করুন, আমার রিজিক প্রশস্ত করুন এবং তাতে বরকত দিন।

যেসব আমলে রিজিক বৃদ্ধি পায়
১. তওবা ও ইস্তিগফার:
গুনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ রিজিক বাড়িয়ে দেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

“তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা চাও, তিনি তোমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে সমৃদ্ধ করবেন।”
(সূরা নূহ: ১০-১২)

২. আল্লাহর ওপর ভরসা (তাওয়াক্কুল):

“যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ করে দেন এবং অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে রিজিক দেন।”
(সূরা তালাক: ৩)

৩. হজ ও ওমরাহ:

“হজ ও ওমরাহ বারবার আদায় করো, কারণ তা অভাব ও গুনাহ মুছে দেয়।”
(তিরমিজি)

৪. হিজরত ও জিহাদ:

“যে আল্লাহর পথে হিজরত করে, সে অনেক আশ্রয় ও সচ্ছলতা পাবে।”
(সূরা নিসা: ১০০)

৫. সময়মতো নামাজ আদায়:

“আমি তোমার কাছে রিজিক চাই না, আমিই তোমাকে রিজিক দিই। নামাজে অটল থাকো।”
(সূরা ত্বহা: ১৩২)

৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা:
আত্মীয়তার হক আদায় করলে রিজিকে বরকত হয়। রাসুল (সা.) বলেন,

“যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততা ও দীর্ঘ জীবন চায়, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।”
(বুখারি ও মুসলিম)

৭. দান-সদকা করা:

“তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, আল্লাহ তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।”
(সূরা সাবা: ৩৯)

৮. বিয়ে করা:

“তারা যদি দরিদ্রও হয়, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করবেন।”
(সূরা নূর: ৩২)

রিজিক বৃদ্ধির জন্য কেবল দুনিয়াবি কৌশল নয়, বরং কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আমলগুলো গ্রহণ করা জরুরি। হালাল পথে উপার্জন, আল্লাহর ওপর ভরসা, ইবাদতের প্রতি যত্নশীলতা, আত্মীয়তার হক আদায় ও সদকা- এইসবই রিজিকে প্রশস্ত করে এবং জীবনে বরকত আনে। আসুন, আমরা এই দোয়া করি, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমাদের হালাল রিজিক দিন, তাতে বরকত দিন এবং হারাম থেকে হেফাজত করুন।’ আমিন।

Check Also

দোয়া মাসুরা বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

Spread the loveআল্লাহর নিকট থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য তার কাছে ক্ষমা চাওয়া, ধরনা দেওয়া কিংবা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *