জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট সম্পর্কে ‘মর্যাদাহানিকর’ ও ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বুধবার (২৮ মে ২০২৫) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই অভিযোগ দাখিল করেন।
গত ২২ মে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা একটি রিট খারিজ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ। ওই দিন বেলা ১১টা ৪৯ মিনিটে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। তিনি লিখেছিলেন, “মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায়, তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কী?”
সারজিসের এই পোস্টকে আদালতের প্রতি অসম্মানজনক ও অবমাননাকর উল্লেখ করে গত ২৪ মে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন তাকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি নোটিশ প্রাপ্তির দুই ঘণ্টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কিন্তু সারজিস আলম এই নোটিশের জবাব না দেওয়ায় ২৮ মে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করা হয়।
আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, “সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টে উচ্চ আদালতের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে, যা আদালত অবমাননার শামিল।” তিনি জানান, নোটিশের জবাব না পাওয়ায় আদালতে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ২২ এপ্রিল হাইকোর্ট রায় দেন, ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে শপথ গ্রহণে কোনো বাধা নেই। এই রায়ের পর সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। হাইকোর্ট ওই রিট খারিজ করে জানান, এই ধরনের বিষয়ে রিট করার এখতিয়ার নেই এবং নির্বাচনী ফোরামের মামলা অন্য ফোরামে না গিয়ে হাইকোর্টে আসা ঠিক হয়নি।
সারজিস আলমের বিরুদ্ধে দাখিল করা এই অভিযোগ বিচার বিভাগের মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে। আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিনের এই পদক্ষেপ আদালতের প্রতি জনগণের আস্থা অক্ষুণ্ন রাখার প্রচেষ্টার অংশ। আদালতের পরবর্তী নির্দেশনা এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে।